English: Click here to read this article in English.
আপনি কি বিলাসবহুল ভাবে অবসর জীবন চান?
আপনি কি বিদেশে ছুটি কাটাতে যেতে চান?
আপনি কি অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের কারণে চিন্তিত ও বিরক্ত এবং এটি নিয়ন্ত্রণের রাস্তার সন্ধান করছেন ?
ঠিক আছে, তাহলে আপনার সমস্ত প্রশ্নের একটি সমাধান খুঁজতে আপনাকে এই ব্লগটি অবশ্যই পড়তে হবে|
আমাদের সমস্ত ইচ্ছা বাস্তবায়িত করার জন্য, কেবলমাত্র আমাদের আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় করলেই হবে না, উপযুক্ত ও সঠিক ভাবে এটি বিনিয়োগেরও প্রয়োজন রয়েছে |
আমাদের ভবিষ্যতের আর্থিক সুরক্ষার জন্য আমাদের সঞ্চিত অর্থের বহুগুণে বৃদ্ধির প্রয়োজন সেই কারণেই বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে |
এইক্ষেত্রেই :”পার্সোনাল ফিন্যান্সের “ গুরুত্ব অপরিসীম|
ফিন্যান্স মানেই নিছক অর্থউপার্জনের সম্পর্ক নয় | এটি হলো আমাদের কোনো সুদীর্ঘ পরিকল্পনা ও লক্ষ্য অর্জনের সাথে শ্রমের ফল রক্ষার বিষয় | ভালো সমাজ গড়ার লক্ষে এটি আমাদের একটি দায়িত্ব – ” রবার্ট জে শিলার”
“পার্সোনাল ফিনান্স ” হলো ভবিষ্যতের পরিকল্পিত লক্ষ্য পূরণের জন্য ব্যক্তিগত অর্থকে পরিচালনা করা |
আপনার ভবিষ্যতের লক্ষ্য অর্জনের জন্য আপনার ব্যক্তিগত অর্থকে কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে আপনি Kredent Money App এর সহায়তা নিতে পারেন।
এই ব্লগে – আমরা, আপনার ব্যক্তিগত অর্থকে সফলভাবে পরিচালনার উপযুক্ত 5 টি সহজ টিপস নিয়ে আলোচনা করব:
১. আপনার আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করে লিখে রাখুন :
পছন্দের জায়গাতে ছুটি কাটাতে যাওয়া, বিলাসবহুল অবসর গ্রহণ, একটি নতুন গাড়ি কেনা, সন্তানের শিক্ষা তহবিলের জন্য সঞ্চয় করা এই সমস্ত কিছুই আর্থিক লক্ষ্য।
আপনি কতটা ভাল বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন তার ওপর নির্ভর করবে আপনার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের ক্ষমতা |
ফিন্সিয়াল গোলস / আর্থিক লক্ষ্য গুলি বিভিন্ন কারণের ওপর নির্ভর করে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্পমেয়াদি দুই প্রকারেরই হতে পারে |
সর্বপ্রথম আপনাকে আপনার সমস্ত দীর্ঘমেয়াদি ও স্বল্প মেয়াদী আর্থিক লক্ষ্যগুলির একটি পৃথক তালিকা তৈরি করতে হবে এবং তারপরে আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক পরিচালনার জন্য সেই অনুযায়ী আপনার বিনিয়োগের পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে ।
উদাহরণ স্বরূপ : দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক লক্ষ পূরণের জন্য আপনি এমন বিনিয়োগ উপাদান চয়ন করতে পারেন যাতে দীর্ঘ লক ইন পিরিয়ডের বৈশিষ্ট রয়েছে : যথা PPF ( পাবলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড) যা ১০- ১৫ বছর পিরিয়ডের মধ্যে আবদ্ধ | এবং সোলপমেয়াদি / শর্ট টার্ম লক্ষ্য গুলি পূরণ করার জন্য আর্থিক পরিকল্পনার প্রয়োজন হলে আপনার চাহিদা অনুসারে নূন্যতম ৩ বছরের লক ইন পিরিয়ডের বিনিয়োগ উপাদানকে বেঁচে নিতে পারেন , যথা ইক্যুইটি লিংকড সেভিং স্কিম (ELSS)|
২. আপনার ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনার জন্য একটি আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করুন:
যদি ইতিমধ্যে আপনার আর্থিক লক্ষ্যগুলি সাজানো থাকে থাকে, তবে একটি সুসংহত পদ্ধতিতে আপনার ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনার প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যান |
ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং / আর্থিক পরিকল্পনা তৈরী না করা হলো অতীব পরিচিত ভুল |
ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং / আর্থিক পরিকল্পনা তৈরীর প্রথম ধাপ হলো ব্যক্তিগত আর্থিক চেকলিস্ট তৈরী করা |
একটি আর্থিক পরিকল্পনা তৈরী করার জন্য সমস্ত পদক্ষেপগুলি জানতে এখানে দেখুন । একটি বিষয় মনে রাখবেন আর্থিক পরিকল্পনা অনুসরণ করার সময় ধারাবাহিকতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি ।
৩. আপনার ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনার জন্য বাজেট তৈরি করুন:
একটি বাজেট আপনাকে আপনার ব্যয়ের অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
ধরা যাক আপনি ৫০ / ৩০ / ২০ বাজেটের থাম্ব রুল অনুসরণ করলেন –
আয়ের ৫০% অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজন খাতে
আয়ের ৩০ % চাহিদা পূরণ খাতে
আয়ের ২০ % সঞ্চয় খাতে
এটি করার মাধ্যমে আপনি আপনার প্রয়োজন অনুসারে আয়ের নিরিখে ব্যয়ের বরাদ্দ করতে পারছেন এবং গুরুত্ব অনুসারে খরচকে অগ্রাধিকার দিতে পারবেন | অবশেষে যা আপনাকে আপনার অপ্রয়োজনীয় ব্যয় নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে |
বাজেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনাকে ব্যয় হ্রাস এবং অতিরিক্ত সঞ্চয় করতে সহায়তা করে।
এই সঞ্চয়গুলিকে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিনিয়োগের বিকল্প যেমন শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড, বন্ড, ফিক্সড ডিপোজিট , রেকারিং ডিপোজিট আমানত ইত্যাদিতে বিনিয়োগের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে |
৪. ঋণ কে না বলতে শিখুন :
ঋণের বোঝা হ্রাস করলে আপনার আর্থিক লক্ষ্য অর্জনের দিকে এটি একটি বড় পদক্ষেপ নিতে আপনাকে সহায়তা করতে পারে।
আমরা সকলেই এমন কিছু মানুষকে অবশ্যই চিনি যারা শপিংমলে উইন্ডো শপিংয়ের জন্য গিয়ে বিভিন্ন গ্যাজেটস, প্রয়োজন অপেক্ষা অতিরিক্ত দামের জুতো ইত্যাদির মতো অযথা ব্যয়বহুল জিনিসগুলির জন্য ক্রেডিট কার্ড দিয়ে অর্থ প্রদান করার সময় দামী জিনিসগুলি কেনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করতে পারেন না |
এই জাতীয় অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের কারণেই ঋণের বৃদ্ধি ঘটে থাকে |
সুতরাং মনে রাখবেন – হয়তো আপনি আপনার আর্থিক লক্ষ্য গুলি জানেন , একটি সুন্দর আর্থিক পরিকল্পনা ও তার সাথে বাজেটও তৈরিও করে ফেলেছেন এমত অবস্থায় আপনি যদি ঋণমুক্ত থাকতে পারেন তবেই ব্যক্তিগত ভালো ফিনান্সিয়াল প্ল্যানিং / আর্থিক পরিকল্পনা পরিচালনা করতে সক্ষম হবেন |
৫ . আর্থিক পরামর্শদাতার সাহায্য নিন :
সকাল ৯ টা থেকে বিকাল 5 টা পর্যন্ত চাকরির মধ্যে সময় দেওয়ার পরে , শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে তাদের ব্যক্তিগত অর্থ পরিকল্পনা এবং বিনিয়োগের জন্য একটি আর্থিক পরিকল্পনা নকশা করার জন্য সময় পাওয়া বেশ কঠিন।
এই ক্ষেত্রে, কোনও আর্থিক পরিকল্পনাকারীর সাথে পরামর্শ করা ভাল।
একজন আর্থিক পরিকল্পনা বিশেষজ্ঞ আপনার আর্থিক সকল দিক ও ঝুঁকির পরিমান বিচার করে আপনার প্রয়োজনীয় আর্থিক পরিকল্পনা তৈরীকরতে আপনাকে সহায়তা করতে পারবেন |
একজন অভিজ্ঞ আর্থিক পরিকল্পনাকারী বাজারে উপলব্ধ বিভিন্ন বিনিয়োগের পণ্যগুলিও সম্পর্কে জ্ঞান ধারণ করেন এবং আপনার বিনিয়োগের জন্য একটি ডাইভার্সিফায়েড পোর্টফোলিও তৈরি করতে সহায়তা করেন যা আপনার আর্থিক পরিকল্পনা ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করবে।
বিশেষ সারমর্ম :-
- আপনার ব্যক্তিগত অর্থ পরিচালনার প্রথম পদক্ষেপেই সর্বদা আপনার আর্থিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা উচিত ।
- আপনার আর্থিক সিদ্ধান্তের দিকনির্দেশনা করার উদেশ্যে উপযোগী আর্থিক পরিকল্পনা তৈরি করুন |
- আপনার অতিরিক্ত ব্যয় অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে বাজেট প্রস্তুত করুন |
- আপনি আর্থিক পরিকল্পনার যে পদ্ধতিই ব্যবহার করুন না কেন প্রধান বিষয় হলো ধারাবাহিকতা বজায় রাখা |
- ব্যক্তিগত ভাবে আপনার ফিনান্স পরিচালনা করার সময় না থাকলে বা এই সম্পর্কিত পরিষ্কার ধ্যান ধারণা না থাকলে একজন আর্থিক পরিকল্পনাকারীর পরামর্শ গ্রহণ করা খুব জরুরি |